স্টোরেজ ডিভাইস (পাঠ ১১)

সপ্তম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কম্পিউটার-সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি | - | NCTB BOOK
148
148

হার্ডডিস্ক (Hard Disk): তোমরা যারা কম্পিউটার ব্যবহার করেছ তারা নিশ্চয়ই হার্ডডিস্কের কথাও জেনে গেছ। কম্পিউটারে খোলা ফাইল হার্ডডিস্কে জমা করে রাখা হয়। এটি আসলে তথ্য সংরক্ষণের প্রধান যন্ত্র। IBM কোম্পানী ১৯৫৬ সালে মেইনফ্রেম ও মিনি কম্পিউটারে ডাটা সংরক্ষণের জন্য প্রথম হার্ডডিস্কের ব্যবহার করে। আইসিটি যন্ত্রগুলোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এদের তথ্য সংরক্ষণের ক্ষমতা। আজকের কম্পিউটারগুলোতে সাধারণত ৫০০ গিগাবাইট থেকে ৪ টেরাবাইট তথ্য ধারণক্ষমতার হার্ডডিস্ক লাগানো থাকে। এমনকি সাধারণ মোবাইল ফোনের তথ্য ধারণ ক্ষমতাও গিগাবাইটে নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। কিন্তু তোমরা শুনলে অবাক হবে ১৯৮০ সালে ১ গিগাবাইট তথ্য ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন হার্ডডিস্কের আকার ছিল একটি বড়সর রেফ্রিজারেটর বা ফ্রিজের সমান। আর এর দামও ছিল অনেক! প্রতি মেগাবাইটের জন্য পনেরো হাজার ডলার বা বারো লাখ টাকা খরচ করতে হতো। মনে হচ্ছে গালগল্প। কিন্তু এটাই বাস্তব! এখনকার হার্ডডিস্কগুলো প্রায় হাতের মুঠোয় এঁটে যায়।

হার্ডডিস্ক

সাধারণত হার্ডডিস্কে কতগুলো চাকতি থাকে যাদের প্লটার বলা হয়। প্লটারগুলো অ্যালুমিনিয়াম এলয় বা কাচ বা সিরামিকের চাকতির উপর পাতলা চুম্বকীয় পদার্থের আস্তরণ দিয়ে তৈরি হয়। এই চুম্বকীয় পদার্থের উপরই তথ্য সংরক্ষিত থাকে। হার্ডডিস্ক চালু হলে এই প্লটারগুলো ঘুরতে থাকে। ঘূর্ণায়মান চাকতিগুলোর সংস্পর্শে হার্ডডিস্কের লেখা/পড়া (Write/Read) হেডটি এলে সে প্লটারে তথ্য সংরক্ষণ অথবা তথ্য পড়ে আমাদের প্রদর্শন করে।

সাধারণত হার্ডডিস্কে কতগুলো চাকতি থাকে যাদের প্লটার বলা হয়। প্লটারগুলো অ্যালুমিনিয়াম এলয় বা কাচ বা সিরামিকের চাকতির উপর পাতলা চুম্বকীয় পদার্থের আস্তরণ দিয়ে তৈরি হয়। এই চুম্বকীয় পদার্থের উপরই তথ্য সংরক্ষিত থাকে। হার্ডডিস্ক চালু হলে এই প্লটারগুলো ঘুরতে থাকে। ঘূর্ণায়মান চাকতিগুলোর সংস্পর্শে হার্ডডিস্কের লেখা/পড়া (Write/Read) হেডটি এলে সে প্লটারে তথ্য সংরক্ষণ অথবা তথ্য পড়ে আমাদের প্রদর্শন করে।

তথ্য ধারণক্ষমতার কারণে হার্ডডিস্ক অত্যন্ত জনপ্রিয়। এটি দুই ধরনের হয়ে থাকে। একটি কম্পিউটারের সাথে স্থায়ীভাবে সংযুক্ত অবস্থায় থাকে। অন্যটি আলাদাভাবে থাকে। একে এক্সটারন্যাল হার্ডডিস্ক বলে। এটি USB পোর্টের মাধ্যমে যেকোনো কম্পিউটার বা ল্যাপটপের সাথে সংযোগ দিয়ে কাজ করা যায়। ফলে বিপুল পরিমাণ তথ্য এক স্থান থেকে অন্যত্র নিতে এখন আর সম্পূর্ণ কম্পিউটারটি না নিয়ে শুধু এক্সটারনেল হার্ডডিস্কটি নিয়ে গেলেই হয়।

সলিড স্টেট ড্রাইভ (SSD): তোমাদের মধ্যে যারা অতি সম্প্রতি কম্পিউটার কিনেছ অথবা সাম্প্রতিককালের কোন কম্পিউটার ব্যবহার করেছ তারা সলিড স্টেট ড্রাইভ বা এসএসডি সম্পর্কে জেনে থাকবে। এসএসডি হল এক ধরনের স্টোরেজ ডিভাইস যা কম্পিউটার এবং ল্যাপটপে ব্যবহৃত হয়। এটি প্রচলিত হার্ড ডিস্ক ড্রাইভ(HDD) থেকে ভিন্ন, এটিতে কোনো চলমান অংশ থাকে না, ফলে এটি আরো দ্রুত এবং আরও অধিক টেকসই হয়। এটি ডেটা সংরক্ষণ করতে ফ্লাশ মেমরি ব্যবহার করে, যা ফাইল এবং অ্যাপ্লিকেশনে দ্রুত অ্যাক্সেসের সুযোগ দেয়। উল্লেখ্য ফ্লাশ মেমরি হল একটি ইলেকট্রনিক নন-ভোলাটাইল স্টোরেজ যাতে ডেটা বৈদ্যুতিকভাবে মুছে ফেলা এবং পুনরায় প্রোগ্রাম করা বা ডেটা সংরক্ষণ করা যায়।

কম্পিউটার চালু করার সময় কমিয়ে এবং সফ্টওয়্যার লোড করার গতি বাড়িয়ে সিস্টেমের কর্মক্ষমতা উন্নত করতে সাধারণত এসএসডি ব্যবহার করা হয়। এসএসডিতে কোন স্পিনিং ডিস্ক নেই, তাই এটি কোন শব্দ উৎপন্ন করে না এবং হার্ডডিস্ক এর চেয়ে কম তাপ উৎপন্ন করে। এটি বাহ্যিক ক্ষতি যেমন শক এবং ড্রপ হিসাবে আরো বেশি প্রতিরোধী। এসএসডি বিভিন্ন আকারে বাজারে পাওয়া যায়, সাধারণত ১২৮ গিগাবাইট (GB) থেকে বেশ কয়েক টেরাবাইট (TB) পর্যন্ত। সামগ্রিকভাবে, এসএসডিকে গতি, নির্ভরযোগ্যতা এবং দক্ষতার জন্য পছন্দ করা হয়।

এসএসডি

ফ্ল্যাশ ড্রাইভ ও মেমোরি কার্ড (Flash Drive & Memory Card): যারা কম্পিউটার ব্যবহার করে তাদের কম্পিউটারের অনেক তথ্য এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে নিতে হয়। সেটা সবচেয়ে সহজে করা যায় নেটওয়ার্কিং ব্যবহার করে। যেখানে নেটওয়ার্ক নেই সেখানে তথ্য নিতে হলে কোনো এক ধরনের স্টোরেজ ডিভাইস ব্যবহার করতে হয়। যে স্টোরেজ ডিভাইসটি সবচেয়ে সহজে বহন করা যায় সেটার নাম পেনড্রাইভ কিংবা ফ্ল্যাশ ড্রাইভ। নাম শুনেই বুঝতে পারছো এটা পেন বা কলমের মতো ছোটো এবং পকেটে করে নেয়া যায়।

পেনড্রাইভ

২০০০ সালের দিকে যখন এগুলো বাজারে আসে তখন ৩২ মেগাবাইট তথ্য ধারণ করতে পারতো। এখন ১ টেরাবাইটের পেনড্রাইভ সহজেই পাওয়া যায়। মূল্যও আগের তুলনায় এখন হাতের নাগালে। এটি সিডি-ডিভিডির তুলনায় টেকেও বেশি দিন। তাই ব্যবহারকারীদের কাছে এর জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে। বিভিন্ন ধরনের সুন্দর ডিজাইনের পেনড্রাইভ বাজারে পাওয়া যায়।

ফ্ল্যাশ ড্রাইভ বা পেনড্রাইভ ছাড়াও বর্তমানে তথ্য সংরক্ষণের জন্য এক ধরনের মাইক্রোচিপ সংযুক্ত কার্ড ব্যবহার করা হয়। এগুলোর নাম মেমোরি কার্ড। মেমোরি কার্ডেও অনেক তথ্য সংরক্ষণ করা যায়। তবে এটি সরাসরি সংযোগ দেওয়া যায় না। এর জন্য নির্ধারিত স্লট প্রয়োজন হয় অথবা কার্ড রিডার ব্যবহার করতে হয়। মেমোরি কার্ড নানা আকৃতি ও বিভিন্ন ক্ষমতার হতে পারে। তোমাদের অত্যন্ত প্রিয় এমপিথ্রি (mp3) বা এমপিফোর (mp4) প্লেয়ার এবং গেমস্ খেলার যন্ত্রগুলো ছাড়াও সকল ধরনের ডিজিটাল ক্যামেরা, মোবাইল ফোন বা স্মার্টফোনে এগুলোর ব্যাপক ব্যবহার লক্ষ করা যায়।

দলগত কাজ
তথ্য সংরক্ষণের জন্য সিডি, ডিভিডি, পেনড্রাইভ অথবা মেমোরি কার্ডের মধ্যে কোনটিকে বেশি উপযোগী মনে কর? যুক্তিসহ বর্ণনা করো।
common.content_added_by
টপ রেটেড অ্যাপ

স্যাট অ্যাকাডেমী অ্যাপ

আমাদের অল-ইন-ওয়ান মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সীমাহীন শেখার সুযোগ উপভোগ করুন।

ভিডিও
লাইভ ক্লাস
এক্সাম
ডাউনলোড করুন
Promotion